ইসকনের ১৭ সদস্যের ব্যাংক হিসাব জব্দ
- By Jamini Roy --
- 29 November, 2024
বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) এবং বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ১৭ ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছে। বিএফআইইউ জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ৩০ দিনের জন্য এসব অ্যাকাউন্টে লেনদেন স্থগিত থাকবে এবং প্রয়োজনে সময়সীমা বাড়ানো হতে পারে।
মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২-এর ২৩(১)(গ) ধারা অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিএফআইইউ দেশের বিভিন্ন ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি দিয়ে এই নির্দেশনা পাঠিয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, ইসকন এবং এর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও তাদের মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নামে পরিচালিত সব অ্যাকাউন্টে লেনদেন ৩০ দিনের জন্য বন্ধ থাকবে। তবে আমদানি ও রপ্তানি সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্ট এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে।
একই সঙ্গে তাদের অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত তথ্য, যেমন হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি (ক্লায়েন্ট তথ্য) ফরম এবং শুরু থেকে সর্বশেষ পর্যন্ত লেনদেন বিবরণী, আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে বিএফআইইউতে জমা দিতে হবে।
যাদের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়েছে, তারা হলেন:
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস (চন্দন কুমার ধর), কার্ত্তিক চন্দ্র দে, অনিক পাল, সরোজ রায়, সুশান্ত দাস, বিশ্ব কুমার সিংহ, চণ্ডীদাস বালা, জয়দেব কর্মকার, লিপি রানী কর্মকার, সুধামা গৌর দাস, লক্ষণ কান্তি দাশ, প্রিয়তোষ দাশ, রূপন দাস, রূপন কুমার ধর, আশীষ পুরোহিত, জগদীশ চন্দ্র অধিকারী এবং সজল দাস।
এই নিষেধাজ্ঞার ফলে উল্লেখিত ব্যক্তিরা তাদের ব্যক্তিগত এবং ব্যবসায়িক কোনো অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ উত্তোলন বা জমা দিতে পারবেন না। বিএফআইইউর নির্দেশনায় বলা হয়েছে, লেনদেন স্থগিত থাকা এই সময়ের মধ্যে তাদের অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ করা হবে এবং প্রয়োজনে সময় আরও বাড়ানো হতে পারে।
এই পদক্ষেপ মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ এবং সন্দেহভাজন আর্থিক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে নেওয়া হয়েছে। ইসকনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে আর্থিক অসঙ্গতি ও সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। ফলে, তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের উপর নজরদারি বাড়াতে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ আর্থিক দুর্নীতি দমন এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ইসকন একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক পর্যায়েও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে সংগঠনটির বাংলাদেশি শাখার কার্যক্রম নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।